কিভাবে একজন স্মার্ট পুরুষ হবেন
প্রত্যেকেই চায় তাকে সবাই স্মার্ট বলুক। কিন্তু এর জন্য কি লাগে তা অনকেরই অজানা।সুদর্শন চেহারা?না তা নয় কিছু ছোটখান বিষয় একটু খেয়াল করে চললেই আপনি হতে পারেন একজন স্মার্ট পুরুষ।আসুন জেনে নেই স্মার্ট হতে কি লাগে?
স্মার্ট কথাটি শুনলেই প্রথমেই মনে আসে ফ্যাশনের কথা।ফ্যাশন কি শুধু মেয়েদের জন্য ? মোটেই না। যুগ পাল্টানোর সাথে সাথে পাল্টে গেছে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি। ফ্যাশন আর এখন মেয়েদের হাতে সীমাবদ্ধ নেই।ছেলেরাও এখন আর পিছিয়ে নেই। তবে এই ফ্যাশন মানে কিন্ত চোখে মুখে চুলে বিভিন্ন প্রসাধনী মেখে বসে থাকা নয়। আপনার রুচি আর পোশাকের সাথে অন্যান্য অনুষঙ্গ ঠিক করে নিন ব্যস, তাতেই আপনি হয়ে উঠবেন স্মার্ট যাকে বলে ফ্যাশানেবল।আসুন জেনে নেই কোন কোন বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে স্মার্ট লুক দিতে।
শার্ট আর প্যান্টের কম্বিনেশন
আপনার ফ্যাশনের মধ্যে অন্যতম বিবেচ্য বিষয় হলো শার্টের সাথে প্যান্ট অথবা প্যান্টের সাথে শার্টের মিল রেখে পরিধান করা। ছেলেদের অনেকের কাছে ফ্যাশনের মধ্যে টি শার্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিশেষ করে অল্প বয়সী ছেলেদের কাছে। যখন কোথাও ঘুরতে যাবেন বা বিশেষ কারো সাথে কিছু সময় কাটাতে যাবেন তখন একটু ভাবনায় পরে যান কি পড়ে যাবেন।যদিও এটা যার যার পছন্দের ওপর নির্ভর করে তবুও একটু চিন্তা করে গায়ের রং অনুযায়ী শার্ট আর প্যান্ট ম্যাচিং করে পড়ে নিন।এক্ষেত্রে আবহাওয়ার কথাও মাথায় রাখতে হবে।তবে অফিসিয়াল বা ফরমাল ড্রেস অথ্যাৎ হাফ শার্টের চেয়ে ফুল শার্টে বেশি স্মার্ট দেখায়।যদি স্যুট পরতে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে স্যুটও পরতে পারেন।
জুতা
ছেলেদের ফ্যাশনে শার্ট আর পান্ট সিলেকশানের পর আসে জুতার প্রসঙ্গ। আর বর্তমানে স্যান্ডেলের ক্ষেত্রে জায়গা করে নিয়েছে পা ঢাকা স্যান্ডেল। তাই ক্যাজুয়াল পোশাকের সাথে বা পাঞ্জাবীর সাথে পড়তে পারেন স্যান্ডেল। ফরমাল হিসেবে শার্টের সাথে মিলিয়ে পড়তে পারেন কালো রং বা হারকা মেরুন রঙ্গের সামনের দিকে গোলাকার সু বা একটু চৌকানো সু। এছাড়াও বাহারী ডিজাইনের স্নিকার্সও পড়তে পারেন হাই শোল্ডার পাঞ্জাবীর সাথে।
এইসব স্টাইলিশ জুতার জন্য ঘুরে আসতে পারেন পারেন বিভিন্ন অনলাইন শপিং ওয়েব সাইটে।
মোজা
সু-এর সাথে মোজাটা পরতেই হয়। এক্ষেত্রে ভাল মানের সুতি মোজা পরাটা জরুরী। কেননা অনেকের পায়ে বেশি সময় সু পরলে গন্ধ সৃষ্টি হয় । সুতি মোজা পায়ে থাকলে পায়ের গাম শুষে নিয়ে সেটা থেকে রক্ষা দেয়। একবার ভাবুনতো , দামি পোশাক দামী কসমেটিকস্ পরে কোন একটা অনুষ্ঠানে গেলেন কিন্তু আপনার পায়ের গন্ধে আশেপাশের লোকজন নাক ছিটকাচ্ছে, তাহলে কেমন হবে? আপনার পুরো আয়োজনটাই বেস্তে যাবে। তাই এ ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে।
বেল্ট
জুতা সিলেকশানের পর আসে বেল্টে কথা। বিশেষ করে যদি ওয়েস্টার্ন লুকে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে চান। এক্ষেত্রে একটি সাইলিশ বেল্ট বেছে নেয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এ জন্য দেখে নিতে পারি অনলাইন শপিং ওয়েব সাইট। অনলাইনে অনেক সাইলিশ কালেকশান পাওয়া যায়।
হেয়ার কাটিং
কথায় আছে মানুষের পারশোনালিটি কিন্তু চুলই নিয়ে আসে। তাই চুলের প্রতি একটু যত্নশীল হওয়া জরুরী। যদি ক্যাজুয়ালি চুল কাটেন তাহলে মাসে দু’বার চুল কেটে শেইপ ঠিক রাখুন। ছোট চুলে স্মার্ট লুক দিতে প্রতিদিন ভাল ব্রান্ডের জেল ব্যবহার করতে পারেন। লম্বা চুলে অনেকের স্মার্টনেস হারিয়ে যায় তাই যদি লম্বা চুল রাখার আগে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আবার যাদের চেহারার গঠন লম্বাটে কিংবা পান আকৃতির তাদের চুল লম্বা রাখলে ভালো দেখায়। যাদের গায়ের রঙ কালো তাদের লম্বা চুল মোটেও ভালো লাগে না। যাদের লম্বা চুল তারা সব সময়ে পোশাকের সঙ্গে মানানসই গার্ডার দিয়ে চুল বেঁধে রাখুন। আর মাঝেমধ্যে চুলের আগা ছেঁটে দিন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন শ্যাম্পু করে চুল পরিষ্কার রাখুন।
দাড়ি কামানো
দাড়িটাও ব্যাপক ভূমিকা রাখে ছেলেদের ফ্যাশনে। তাই যারা ক্লিন শেভে অভ্যস্ত তারা প্রতিদিন সেভ করে আফটার সেভ লোশন দিয়ে মুখটা ম্যাসাজ করে নিন। যারা দাড়ি রাখেন তারা সপ্তাহে নিয়ম করে দাড়িগুলো সাইজ করে নিন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। আর দাড়ি যদি পেকে থাকে তাহলে ক্লিন শেভটাই মনে হয় প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
সানগ্লাস বা চশমা
যদি রোদ থেকে রক্ষা পেতে সানগ্লাস ব্যবহার করতে চান। তবে আপনার মুখের সাথে মানানসই সুন্দর ডিজাইনের সানগ্লাস পড়ুন। আর যদি চশমা ব্যবহার করেন তাহলে ফ্রেম টা আপডেট রাখুন। এক্ষেত্রেও অনলাইন শপিং আপনাকে অনেক হেল্প করতে পারে।
বডি স্প্রে বা পারফিউম
বডি স্প্রে বা পারফিউম স্মার্টনেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ না হলেও অনেকের কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করে। চাইলে আপনিও ব্যবহার করতে পারেন । এক্ষেত্রে একটি ভালমানের ভাল স্মেইলের পারফিউম বা বডি স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। যদি আন্ডার আর্মের দুর্গন্ধ থাকে তাহলে আপনার জন্য অনেক বিরক্তিকর পরিস্থীতি থেকে মুক্তি দেবে। ভাল ভাল ব্যান্ডের কসমেটিস্ সামগ্রী যোগান দিচ্ছে এখন অনলাইন শপিং।
সবশেষে নিজেকে যদি একজন স্মার্ট বা ফ্যাশানেবল হিসেবে উপস্থাপন করতে চান তাহলে আপনার শার্ট প্যান্ট, জুতা ,বেল্ট, সানগ্লাস, চুল-দাড়ি, চশমা , কসমেটিকস্ ছাড়াও বিভিন্ন টুকিটাকি বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখতে হবে। যেমন কোন ধরনের অনুষ্ঠানে কি ধরণের পোশাক পরবেন, টাই পরবেন কি পরবেন না ইত্যাদি।
জেনে নিন যে বিষয়গুলো ছেলেদের স্মার্টনেস বাড়ায়ঃ
- বাইরে কোথাও কারো সঙ্গে অ্যাপয়েনমেন্ট থাকলে অবশ্যই শেভ করে যাবেন। যাদের দাড়ি আছে তারা ঠিকমতো ছেঁটে পরিপাটি হয়ে যাবেন। কেননা এ বিষয়টি আপনার স্মার্টনেস অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে।
- হেয়ার কাটিংয়ের জন্য দেখে-শুনে একজন ভালো হেয়ার ড্রেসার নির্বাচন করুন। আপনার চেহারা, ফিগার এবং ইচ্ছার সঙ্গে মানানসই রেখে যেন কাজটি সমাধা হয়। প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন। নিয়মিত ব্যবধানে চুল কাটুন। এ ক্ষেত্রে ৪-৬ সপ্তাহ অন্তর হেয়ারকাট দেয়াই ভালো। মনে রাখবেন, আপনার আউটলুকিংয়ের ক্ষেত্রে চুল বড় একটা স্থান দখল করে আছে।
- প্রতি মাসে অন্তত একবার নাক এবং কানের লোম পরিষ্কার করুন।
- পোশাকের সঙ্গে মানানসই বেল্ট এবং জুতা নির্বাচনে সতর্ক থাকুন। এ দুটি পরিচ্ছদ অনেক ক্ষেত্রে মানানসই হয় না। ফলে পরিহিত দামি পোশাকটি অর্থময় হয়ে ওঠে না। তবে কালো এবং বাদামি রঙের জুতা-বেল্ট পরিবর্তন করে ব্যবহার করলে এ ঝামেলা এড়ানো যায়।
- রঙিন পোশাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। এমন কোনো রঙের পোশাক ব্যবহার করবেন না যাতে আপনার ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়ে যায়। কথায় আছে, খাবার খাবেন নিজের পছন্দের আর পোশাক পরবেন অন্যের পছন্দের। প্রয়োজনে এ বিষয়ে বন্ধু-বান্ধব কিংবা কোনো শুভাকাঙ্ক্ষীর সাহায্য নিতে পারেন।
- পারফিউম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হোনে। ছেলেদের জন্য আফটার শেভ লোশন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দামি হলেও চেষ্টা করুন ভালো মানের পণ্যটি ব্যবহার করার। এছাড়া ঋতুভেদে ভিন্ন ভিন্ন বডি স্প্রে, সেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করুন।
- একই গেটআপের ক্ষেত্রে কালো এবং বাদামি রঙের পোশাক এক সঙ্গে ব্যবহার করবেন না। কারণ কালো জুতার সঙ্গে বাদামি রঙের বেল্ট অথবা বাদামি কোটের সঙ্গে কালো জুতা পরলে পরস্পর দ্বন্দ করতে পারে মানে খুব চোখে লাগে এই কম্বিনেশন্টা। প্রয়োজনে সবকিছুই কালো অথবা সবকিছুই বাদামি রঙের পরতে পারেন।
- পরিহিত পোশাক যেন খুব বেশি ঢিলেঢালা না হয় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।
- কথা বলার সময় মুখে দুর্গন্ধ থাকলে কেউ আপনাকে সমীহ করবে না। কেননা এটি অত্যন্ত খারাপ একটি ব্যাপার। এ সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য প্রতি ৬ মাসে অন্তত একবার ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন। দিনে অন্তত ২ বার ব্রাশ করুন। পার্টি কিংবা মিটিংয়ের আগে মাউথ ফ্রেশনার ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে আপনার গাড়ি অথবা অফিসের ডেস্ক ড্রয়ারেও মাউথওয়াশ রাখতে পারেন।
- পরিহিত পোশাক যেন ৩টির বেশি রঙ ধারণ না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। জুয়েলারি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এ ধরনের সতর্কতা বজায় রাখুন।
- একই স্টাইল দিনের পর দিন ব্যবহার করবেন না। সময়ের সঙ্গে নিজের স্টাইলকে বদলান। কেননা আপনি না বদলালেও দেখবেন আপনার পাশের জন বদলেছেন। সে ক্ষেত্রে আপনি পিছিয়ে পড়বেন